Ad sence

Student অবস্থায় টাকা আয় শুরু করার সহজ ৭ টা উপায়

 




একই চায়ের দোকানে দুই বন্ধুর গল্প: ডলারের মায়া এবং আসল ইনকামের কথা

একটা ছোট্ট চায়ের দোকানে দুইজন বন্ধু বসে গল্প করছিলো। দুজনেই নানা বিষয়ে কথা বলছিলো — জীবন, চাকরি, ইনকাম, স্বপ্ন, এবং ভবিষ্যত। হঠাৎ করেই একটা লোক দোকানে ঢুকে তাদের কথোপকথন কানে কানে শুনতে লাগলো। সে লক্ষ্য করলো দুই বন্ধুই টাকা পয়সার কথাই বলছে।

কৌতূহলী হয়ে সে কাছে গিয়ে বলল, “ভাই, আপনি দিনে কত টাকা ইনকাম করেন?”

বন্ধুদের একজন বলল, “আমার দিনে প্রায় ৫০ ডলারের মতো ইনকাম হয়।”

লোকটা বলল, “দেখুন তো! দিনে ৫০ ডলার, মাসে ১৫০০ ডলার হয়। দারুণ ইনকাম!”

সেটাই শুনে সে লোক বলল, “আসেন, আমি একটা পডকাস্ট শুরু করতে যাচ্ছি। আপনি আমার প্রথম গেস্ট হবেন। পডকাস্টের নাম হবে—‘কিভাবে মাসে ১৫০০ ডলার ইনকাম করবেন।’”

এই সময় চায়ের দোকানের পাশেই বসা ঝালমুড়িওয়ালাটা হাসতে হাসতে বলল, “আমার তো দিনে প্রায় ৫০০০ টাকা বিক্রি হয় ঝালমুড়ির। মাসে প্রায় ১৫০০ ডলারের কাছাকাছি। আমাকে কেউ ডাকে না!”

একজন ঝালমুড়ি ক্রেতাও হাসতে হাসতে বলল, “কারণ আপনার ৫০০০ টাকা দিনে ইনকাম, আর এই ছেলের ৫০ ডলার দিনে ইনকাম দুইটা শুনতে একরকম হলেও আসলে এক নয়।”

এই ছোট্ট ঘটনার মাধ্যমে একটা বড় সত্য সামনে আসে — আমরা অনেকেই ডলারকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি, অথচ দেশের টাকায় আমাদের আসল ইনকামের মূল্য বুঝি না।


ডলারের নেশা এবং বাংলাদেশের বাস্তবতা

আমাদের দেশে ডলারের প্রতি একটা অস্বাভাবিক আকর্ষণ আছে। কিন্তু ১০০০ ডলার মাসে ইনকাম করলেই সেটা অনেক বড় কথা নয় আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে। অনেক সময়ই আমরা ডলার মানে ভাবি বিশাল সম্পদ, কিন্তু বাস্তবে সেটা নাও হতে পারে।

বাংলাদেশে ১০০০ ডলার মাসিক ইনকাম মোটেও বেশি কিছু নয়। তাই ডলারের পিছনে ছুটে গিয়ে নিজের বাস্তব অবস্থা বুঝতে পারা গুরুত্বপূর্ণ।


স্টুডেন্টদের জন্য ৬টি ইনকাম জেনারেটের আইডিয়া

এখন আসি সবচেয়ে জরুরি অংশে — যারা স্টুডেন্ট বা তরুণ, তাদের জন্য কী কী ইনকাম আইডিয়া আছে, যেগুলো তারা সহজেই শুরু করতে পারে।

১. পার্টটাইম টিউশন বা জব

অনেকে ভাবেন, এক টিউশন থেকে ৫০০০ টাকা হয়, তাহলে ১০টা টিউশন করলেই মাসে ৫০ হাজার টাকা হবে। কিন্তু এতে সময় পুরোপুরি ব্যয় হয়, এবং এটি ফুলটাইমের মতো হয়ে যায়। টিউশন দিয়ে বড় হওয়ার সুযোগ নেই, নতুন কিছু শেখার জায়গা কম। তাই সময় ভালোভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

২. ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং চাকরির মতো, যেখানে অনেক ক্লায়েন্ট থাকে, বিভিন্ন কাজ করতে হয়। ভালো স্কিল শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন, তবে এটাকে এন্ড গোল হিসেবে না নিয়ে পার্টটাইম ইনকাম হিসেবে দেখুন।

৩. কানেক্টর (মিডিয়ারেটর)

বিভিন্ন মানুষকে বা সার্ভিস প্রোভাইডারকে একে অন্যের সাথে কানেক্ট করে কমিশন বা পারসেন্টেজ আয়ের সুযোগ আছে। যেমন, কারো কাছে ভালো ল্যাঙ্গুয়েজ টিউটর আছে, অন্য কারো ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে চায়, এভাবে কানেক্ট করে কাজ করতে পারেন।

৪. বি রাইটার ফর সিইওস (বিজনেস/ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য রাইটার)

সিইও বা ব্যবসায়িক বড়দের সময় থাকে না নিজের কনটেন্ট লেখার। আপনি তাদের জন্য লেখালেখি করে দিতে পারেন। এতে তাদের অনলাইন উপস্থিতি বাড়ে, আর আপনি ইনকাম করেন।

৫. টিকটক/ইনস্টাগ্রাম ম্যানেজমেন্ট

অনেক ইনফ্লুয়েন্সার বা ব্যবসায়ী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজ করতে পারেন না। আপনি তাদের পেজ বা প্রোফাইল পরিচালনা করতে পারেন। এতে ভালো ইনকাম হয়।

৬. ব্লগিং

নিজের পছন্দের বিষয়ের ওপর ব্লগ শুরু করে এফিলিয়েট মার্কেটিং বা অ্যাড দিয়ে ইনকাম করা যায়। ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে হয়, তবে লাভজনক হতে পারে।


শেষ কথা

সবশেষে বলতে চাই, ইনকাম শুধুই ডলারের গণ্ডিতে না বেঁধে দেশের টাকায় ভাবুন। ছোট ছোট ইনকাম যদি সচেতনভাবে ও পরিকল্পনা সহকারে করা হয়, তা বড় ধাপে পরিণত হতে পারে। সময় বিক্রি করে টাকা আয়ের পাশাপাশি নিজের স্কিল ও ব্যবসার দিকে মনোযোগ দিন।

আশা করি এই গল্প আর আইডিয়া গুলো আপনাদের চিন্তা ভাবনাকে বদলাবে এবং অনুপ্রেরণা দেবে

No comments

Powered by Blogger.